ঢাকা , সোমবার, ০২ জুন ২০২৫ , ১৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
সংবাদ শিরোনাম
এটিএম আজহারের মুক্তির প্রতিবাদে ঢাবিতে নাগরিক সংহতি সমাবেশ সব দলই ডিসেম্বরে নির্বাচন চায়-সমমনা জোট বাজেট ঘোষণা আগামীকাল, আসছে যেসব পরিবর্তন খুশির ঈদযাত্রায় ট্রেন ছাড়ছে সময় মতোই উচ্ছ্বসিত ঘরমুখো মানুষ আমরা মানুষ চিনতে ভুল করেছি-গয়েশ্বর জনগণ বিএনপিকে ভোট দেবে বলেই নির্বাচন নিয়ে টালবাহানা করছে -সালাম রাজধানীতে ৪ মাসে খুন ১৩৬ জন শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে জুলাই গণহত্যার আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল আজ সেন্টমার্টিনে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন খাদ্য ও জ্বালানি সংকট ফ্যাসিবাদী রাজনীতির শূন্যস্থান পূরণের অপচেষ্টায় জামায়াত-শিবির ঈদের পর রাজপথ কাঁপাবে জামায়াত টানা বৃষ্টিতে লোকালয়ে ঢুকছে পানি জুলাই আন্দোলনে ১৬৮ পথশিশু নিহত: লিডো গ্যাস সংকট নিয়ে শিল্প মালিকদের অভিযোগের সত্যতা পেয়েছেন জ্বালানি উপদেষ্টা ২ জুন বিএনপিকে যমুনায় আমন্ত্রণ জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা বাংলাদেশসহ ১৪ দেশের ‘ব্লক ওয়ার্ক ভিসা’ স্থগিত করেছে সৌদি আরব পর্দার অন্তরালে ত্রিমুখী আলোচনায় নির্বাচন সুগন্ধি চাল রফতানির অনুমতি পেলো আরও ৫২ প্রতিষ্ঠান ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে ঈদযাত্রায় ভোগান্তির শঙ্কা আম উৎপাদনে উত্তম কৃষি চর্চা সারা দেশে ছড়িয়ে দিতে হবে : কৃষি সচিব
* ৭ বিভাগে হতে পারে অতিভারী বৃষ্টি * চট্টগ্রামে পাহাড় ধসের আশঙ্কায় মাইকিং, খোলা হয়েছে আশ্রয়কেন্দ্র * সিলেটের নদ-নদীর পানি বেড়ে বিপৎসীমার কাছাকাছি * নোয়াখালীতে চলতি মৌসুমে একদিনে এটি সর্বোচ্চ বৃষ্টির রেকর্ড

বঙ্গোপসাগরে গভীর নিম্নচাপ ঝড়ো হাওয়া ভারী বৃষ্টি

  • আপলোড সময় : ৩১-০৫-২০২৫ ০৬:২৮:৫৭ অপরাহ্ন
  • আপডেট সময় : ৩১-০৫-২০২৫ ০৬:২৮:৫৭ অপরাহ্ন
বঙ্গোপসাগরে গভীর নিম্নচাপ ঝড়ো হাওয়া ভারী বৃষ্টি
আতাউর রহমান জুয়েল
বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন নিম্নচাপটি ঘনীভূত হয়ে গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। রাঙামাটির সকল ধরনের নৌযানের চলাচল পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত বন্ধ রাখার জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ জানানো হয়। গতকাল শুক্রবার সকালে এক জরুরি বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন রাঙামাটির জেলা প্রশাসক। সিলেটেও ভারি বর্ষণ ও দমকা হাওয়া অব্যাহত রয়েছে। গতকাল শুক্রবার গভীর নিম্নচাপটি স্থল নিম্নচাপে রূপ নেয়। এতে দেশের অন্যান্য স্থানের মতো ভোর থেকে সিলেটে ভারী বর্ষণ ও দমকা হাওয়া বইছে। টানা বৃষ্টির সঙ্গে যুক্ত হয়েছে ভারতের পাহাড়ি ঢল। এতে সিলেটের নদ-নদীর পানি বেড়ে বিপৎসীমার কাছাকাছি পৌঁছে গেছে। নোয়াখালীতে গত ২৪ ঘণ্টায় ২৮৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। জেলায় চলতি মৌসুমে একদিনে এটি সর্বোচ্চ বৃষ্টির রেকর্ড। এতে উপকূলীয় কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার মুছাপুর ও চরহাজারী ইউনিয়ন, চরএলাহী ও হাতিয়ার বিভিন্ন নিচু এলাকা প্লাবিত হয়েছে। নদ-নদীতে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি জোয়ারের পানি প্রবাহিত হয়ে বিভিন্ন গ্রাম ব্যাপকভাবে প্লাবিত হওয়ায় পরিস্থিতি দুর্ভোগে রূপ নিয়েছে। পাহাড় ধসের আশঙ্কায় চট্টগ্রাম নগরীর বিভিন্ন স্থানে লোকজনকে সচেতন করতে মাইকিং করছে জেলা প্রশাসন। এ ছাড়া চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) পাহাড়ের পাদদেশে ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাসরত লোকজনকে নিরাপদ স্থানে সরে যাওয়ার নির্দেশনা দিয়েছে। খোলা হয়েছে আশ্রয়কেন্দ্র। সক্রিয় নিম্নচাপের প্রভাবে চট্টগ্রামে ভারী বৃষ্টিপাত হচ্ছে। আবহাওয়া অফিস ও স্থানীয় বিভিন্ন সূত্রে এ সব তথ্য জানা যায়।
সাতক্ষীরা ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থিত স্থল গভীর নিম্নচাপটি আরও উত্তর অথবা উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর ও ক্রমান্বয়ে দুর্বল হয়ে প্রথমে স্থল নিম্নচাপ এবং পরে আরও দুর্বল হয়ে সুস্পষ্ট লঘুচাপ হিসেবে শেরপুর ও তৎসংলগ্ন মেঘালয়ে অবস্থান করেছে। এর প্রভাবে দেশের সাত বিভাগে ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টি হতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস। শুক্রবার আবহাওয়া অফিসের ভারী বৃষ্টিপাতের সতর্কবার্তায় এ তথ্য জানানো হয়েছে।
 এতে বলা হয়েছে, শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় রংপুর, খুলনা, বরিশাল, ঢাকা, ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায় ভারী (৪৪-৮৮ মিলোমিটার/২৪ ঘণ্টা) থেকে অতিভারী (১৮৮ মিলোমিটার/২৪ ঘণ্টা) বর্ষণ হতে পারে। অতিভারী বর্ষণের কারণে চট্টগ্রাম, রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি, বান্দরবন ও কক্সবাজার জেলাগুলোতে পাহাড়ি এলাকার কোথাও কোথাও ভূমিধসের সম্ভাবনা রয়েছে। সেইসঙ্গে ভারী বর্ষণজনিত কারণে ঢাকা ও চট্টগ্রাম মহানগরীর কোথাও কোথাও অস্থায়ীভাবে জলাবদ্ধতা তৈরি হতে পারে। এছাড়া সাতক্ষীরা ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থিত স্থল গভীর নিম্নচাপটি অগ্রসর ও ক্রমান্বয়ে দুর্বল হয়ে প্রথমে স্থল নিম্নচাপ এবং পরে আরও দুর্বল হয়ে সুস্পষ্ট লঘুচাপ হিসেবে শেরপুর ও তৎসংলগ্ন মেঘালয়ে অবস্থান করেছে।
নিম্নচাপের প্রভাবে সিলেটে ভারী বর্ষণ ও দমকা হাওয়া অব্যাহত রয়েছে। গতকাল শুক্রবার দেশের অন্যান্য স্থানের মতো ভোর থেকে সিলেটে ভারী বর্ষণ ও দমকা হাওয়া বইছে। টানা বৃষ্টির সঙ্গে যুক্ত হয়েছে ভারতের পাহাড়ি ঢল। এতে সিলেটের নদ-নদীর পানি বেড়ে বিপৎসীমার কাছাকাছি পৌঁছে গেছে। গতকাল শুক্রবার বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত সিলেটজুড়ে মুষলধারে বৃষ্টি ঝরেছে। ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে ছুটির দিনে ভোগান্তিতে পড়েছেন মানুষজন। জরুরি কাজ ব্যতীরেকে কেউ বাসা-বাড়ি থেকে বের হচ্ছেন না। আবহাওয়া অধিদফতর সিলেট অফিসের তথ্যমতে, গত ২৪ ঘণ্টায় অর্থাৎ গত বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা থেকে গতকাল শুক্রবার সকাল ৬টা পর্যন্ত ৮৭ দশমিক ৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। আর গতকাল শুক্রবার সকাল ৬টা থেকে ৯টা পর্যন্ত ৩ ঘণ্টায় বৃষ্টিপাতের রেকর্ড করা হয়েছে ৫৩ মিলিমিটার এবং ৯টা থেকে ১২ টা পর্যন্ত ৬১ মিলিমিটার। সিলেট আবহাওয়া অফিসের সহকারী আবহাওয়াবিদ শাহ মো. সজিব হোসাইন বলেন, গভীর নিম্নচাপের প্রভাবে সিলেটে ভারীবর্ষণ ও দমকা হওয়া বহমান রয়েছে। সাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপটি গতকাল শুক্রবার স্থল নিম্নচাপে পরিণত হয়। এ কারণে দিনভর বৃষ্টি হবে। এদিকে, ভারতের মেঘালয়ের চেরাপুঞ্জিতে গত ২৪ ঘণ্টায় বৃষ্টিপাত ২১৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। সেদেশের আবহাওয়া অফিস বৃষ্টিপাতের এই তথ্য রেকর্ড করেছে। ফলে উজানের ঢল ও ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে সিলেটের সকল নদ-নদীতে পানি বাড়ছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডে সিলেটের তথ্যমতে, সকাল ৯টা পর্যন্ত সুরমা, কুশিয়ারা, ধলাই, পিয়াইন ও সারি নদীসহ সবকটি নদনদীর পানি সমতলে মান বৃদ্ধি পাচ্ছে। সব পয়েন্টে বিপৎসীমার কাছাকাছি। পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী, জেলার কানাইঘাটে সুরমার পানি বেড়ে হয়েছে ৮ দশমিক ৩৪ সেন্টিমিটার, বিপৎসীমা ১২ দশমিক ৭৫ সে.মি। সিলেটে পয়েন্টে ৭ দশমিক ২২ সে.মি, বিপৎসীমা ১০ দশমিক ৮ সে.মি.। কুশিয়ারা জকিগঞ্জের অমলসিদে ৯ দশমিক ৬৯ সেন্টিমিটার, বিপৎসীমা ১৫ দশমিক ৪০ সে.মি.। শেওলা পয়েন্টে ৮ দশমিক ২৯ সে.মি, বিপৎসীমা ১৩ দশমিক ০৫ সে.মি। ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে ৭ দশমিক ৫৭ সে.মি, বিপৎসীমা ৯ দশমিক ৪৫ সে.মি.। এছাড়া পাহাড়ি নদী কানাইঘাটের লোভাছড়ার পানি বেড়ে হয়েছে ৮ দশমিক ৬৪ সে.মি, বিপৎসীমা ৮ দশমিক ৫৫ সে.মি। জৈন্তাপুরের সারি নদী ৯ সে.মি., বিপৎসীমা ১২ দশমিক ৩৫ সে.মি। জাফলং ডাউকি ৯ দশমিক ২০ সে.মি বিপৎসীমা ১৩ সে.মি.। গোয়াইনঘাট সারি গোয়াইন ৮ দশমিক ০৬ সে.মি., বিপৎসীমা ১০ দশমিক ৮২ সে.মি. এবং একই বিপৎসীমায় জেলার কোম্পানীগঞ্জের ইসলামপুর ধলাই নদীর পানি বেড়ে ৮ দশমিক ১৬ সেন্টিমিটারে পৌঁছেছে। গতকাল শুক্রবার দুপুর সাড়ে ১২টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত সিলেটের ওপর দিয়ে ভারী বৃষ্টিপাত ও দমকা হাওয়া অব্যাহত রয়েছে।
রাঙামাটির সকল ধরনের নৌযানের চলাচল পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত বন্ধ রাখার জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ জানানো হয়েছে। গতকাল শুক্রবার সকালে এক জরুরি বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন রাঙামাটির জেলা প্রশাসক। বিজ্ঞপ্তিতে আরও উল্লেখ করা হয়, অভ্যন্তরীণ নদীবন্দরসমূহে ২ নম্বর নৌ হুঁশিয়ারি সংকেত জারি করা হয়েছে। সে পরিপ্রেক্ষিতে যাত্রী সাধারণের জানমালের নিরাপত্তার স্বার্থে উপকূলীয় ও অভ্যন্তরীণ নৌপথে চলাচলকারী সকল ধরনের নৌযানের চলাচল পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত বন্ধ রাখার জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ জানানো হয়েছে। রাঙামাটি লঞ্চ মালিক সমিতির সভাপতি মাইন উদ্দিন সেলিম জানিয়েছেন, কাপ্তাই হ্রদ উত্তাল থাকায় জেলা প্রশাসকের নির্দেশনার সঙ্গে সঙ্গে জেলার বাঘাইছড়ি, লংগদু, বরকল, জুড়াছড়ি, বিলাইছড়ি ও নানিয়ারচর উপজেলার সঙ্গে চলাচলকারী লঞ্চসহ সকল প্রকার নৌযান চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। তিনি আরও জানান, আবহাওয়া পরিস্থিতির উন্নতি হলে পরবর্তীতে জেলা প্রশাসনের নির্দেশনা পেলে যথারীতি আবারও এ সকল নৌপথে নৌযান চলাচল শুরু হবে। উল্লেখ্য, রাঙামাটি থেকে ছয় উপজেলার মানুষ নৌপথে চলাচল করে।
নোয়াখালীতে গত ২৪ ঘণ্টায় ২৮৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। জেলায় চলতি মৌসুমে একদিনে এটি সর্বোচ্চ বৃষ্টির রেকর্ড। এতে উপকূলীয় কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার মুছাপুর ও চরহাজারী ইউনিয়ন, চরএলাহী ও হাতিয়ার বিভিন্ন নিচু এলাকা প্লাবিত হয়েছে। নদ-নদীতে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি জোয়ারের পানি প্রবাহিত হয়ে বিভিন্ন গ্রাম ব্যাপকভাবে প্লাবিত হওয়ায় পরিস্থিতি দুর্ভোগে রূপ নিয়েছে। গতকাল শুক্রবার সকালে জেলা আবহাওয়া পর্যবেক্ষণকেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. রফিকুল ইসলাম জানান, গত বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় ২৮৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। গভীর নিম্নচাপের কারণে আরও বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। এদিকে, দ্বীপ উপজেলা হাতিয়াসংলগ্ন বঙ্গোপসাগর উত্তাল রয়েছে। বড় বড় ঢেউ আছড়ে পড়ছে তীরে। নদ-নদীর পানিও বৃদ্ধি পেয়েছে। জোয়ারের তোড়ে কোম্পানীগঞ্জ ও হাতিয়ার কয়েকটি বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে ঘরবাড়ি ডুবে গেছে । ভেসে গেছে অসংখ্য মাছের ঘের ও পুকুর। ডুবে গেছে ধান, শাকসবজি ও অন্যান্য ফসল। হাতিয়ার মেঘনা নদীতে এমভি ফাহিম নামে একটি পণ্যবাহী ট্রলার চার কোটি টাকার মালামাল নিয়ে ডুবে যায়। উপকূলীয় এলাকায় ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্কসংকেত বলবৎ রয়েছে। স্থানীয়রা জানান, গত বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে স্বাভাবিকের চেয়ে অতিরিক্ত জোয়ারের পানি ঢুকতে শুরু করেছে নিঝুম দ্বীপের বিভিন্ন এলাকায়। এতে দুর্ভোগে পড়ে মানুষ ও জাতীয় উদ্যানের বনের হরিণ। এ ছাড়া হাতিয়ার চর ঈশ্বর, নলচিরা, ঢালচর, সুখচর, চরঘাসিয়াসহ বিভিন্ন চরের সড়ক ও বাড়িঘরে জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হয়েছে। উপকূলীয় এলাকার মানুষ আতঙ্কিত জোয়ারের অতিরিক্ত পানির ভয়ে। নোয়াখালী জেলা প্রশাসক খন্দকার ইসতিয়াক আহমদ বলেন, বৈরী আবহাওয়া মোকাবিলায় আমাদের সব ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে। জানমালের নিরাপত্তা রক্ষায় উপজেলা প্রশাসন, পানি উন্নয়ন বোর্ড, রেড ক্রিসেন্টসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কাজ করছে।
পাহাড় ধসের আশঙ্কায় চট্টগ্রাম নগরীর বিভিন্ন স্থানে লোকজনকে সচেতন করতে মাইকিং করছে জেলা প্রশাসন। এ ছাড়া চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) পাহাড়ের পাদদেশে ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাসরত লোকজনকে নিরাপদ স্থানে সরে যাওয়ার নির্দেশনা দিয়েছে। খোলা হয়েছে আশ্রয়কেন্দ্র। সক্রিয় নিম্নচাপের প্রভাবে চট্টগ্রামে ভারী বৃষ্টিপাত হচ্ছে। এ কারণে চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্কতা সংকেত দেখিয়ে যেতে বলেছে আবহাওয়া অধিদফতর। এ ছাড়া ভারি বৃষ্টিপাতের কারণে ভূমিধসের পূর্বাভাসও রয়েছে। তাই ক্ষয়ক্ষতি রোধে জেলা প্রশাসন গত বৃহস্পতিবার রাত থেকে মাইকিং শুরু করে, যা গতকাল শুক্রবারও অব্যাহত ছিল।
জেলা প্রশাসনের নেজারত ডেপুটি কালেক্টর (এনডিসি) মো. আল আমিন হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, পাহাড় ধসে ক্ষতি এড়াতে ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড়ের পাদদেশে বসবাসকারীদের সরিয়ে দেয়া হচ্ছে। গত বৃহস্পতিবার থেকে দু’টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত করা হয়েছে। পাহাড় সংলগ্ন ৩০ থেকে ৪০ ফুট দূরুত্বে থাকা ঝুঁকিপূর্ণ ঘরগুলোর বাসিন্দাদের নিরাপদ স্থানে পাঠানো হচ্ছে। গত বৃহস্পতিবার রাত থেকে তা নিশ্চিত করা হচ্ছে। পাশাপাশি ফিরোজশাহ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যলয় ও লেকসিটি সংলগ্ন বি ব্লক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। আশ্রয়কেন্দ্রে যারা অবস্থান করবেন তাদের খাবারের ব্যবস্থা করা হবে বলেও এ কর্মকর্তা জানিয়েছেন।
চট্টগ্রামের পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিসের পূর্বাভাস কর্মকর্তা মো. ইসমাইল ভূঁইয়া বলেন, গত বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টা থেকে গতকাল শুক্রবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত ১৯৮ দশমিক ৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। চট্টগ্রামে অতি ভারী বৃষ্টিপাত হয়েছে। গভীর নিম্নচাপ এবং মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাত হচ্ছে। বৃষ্টিপাত আরও ২-৩ দিন অব্যাহত থাকবে। পাহাড় ধসের সম্ভাবনা রয়েছে বলেও জানিয়েছেন এ কর্মকর্তা।
নিম্নচাপের প্রভাবে গত বৃহস্পতিবার রাতে চট্টগ্রাম জেলায় অতি ভারী বর্ষণ ও দমকা হাওয়ায় বিভিন্ন সড়কে গাছপালা উপড়ে পড়ে যানবাহন চলাচলে ব্যাঘাত ঘটেছে। অপরদিকে নগরীর বিভিন্ন স্থানে পানি জমে জনদুর্ভোগ সৃষ্টি হয়েছে। এদিকে, জেলার রাউজান, রাঙ্গুনিয়া, আনোয়ারা, বাঁশখালী, চন্দনাইশ, ফটিকছড়িসহ বেশ কয়েকটি উপজেলায় সড়কের উপর গাছ উপড়ে পড়ে। এ কারণে এসব এলাকার সড়কগুলোতে যানবাহন চলাচল দীর্ঘক্ষণ বন্ধ থাকে। এমনটাই জানিয়েছে চট্টগ্রাম বিভাগীয় ফায়ার সার্ভিস অফিসের কন্ট্রোল কর্মকর্তা ইসমাইল হোসেন। তিনি বলেন, জেলার গুরুত্বপূর্ণ চট্টগ্রাম কাপ্তাই সড়কের রাউজান তাপবিদ্যুৎ এলাকায় সড়কের পাশে থাকা দু’টি বড় আকৃতির গাছ সড়কের উপর উপড়ে পড়ে। রাতেই গাছগুলো বাতাসের কারণে উপড়ে পড়ে। এ কারণে যানবাহন চলাচলে ব্যাঘাত সৃষ্টি হয়। একই সড়কের রাঙ্গুনিয়া উপজেলার মরিয়মনগর চৌমুহনী এলাকায় সড়কের ওপর গাছ ভেঙে পড়ে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের টিম গতকাল শুক্রবার সড়কের ওপর ভেঙে পড়া গাছগুলো অপসারণ করে যান চলাচল স্বাভাবিক করে। এ ছাড়াও আনোয়ারা, বাঁশখালী, চন্দনাইশ, ফটিকছড়িসহ বেশ কয়েকটি উপজেলায় সড়কের উপর গাছ উপড়ে পড়ে। যেগুলো ফায়ার সার্ভিসের টিম সকালে একে একে অপসারণ করে। এরপর যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হয়।
মো. ইসমাইল ভূইয়া আরও বলেন, চট্টগ্রামে অতি ভারী বৃষ্টিপাত হয়েছে। গভীর নিম্নচাপ এবং মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাত হচ্ছে। বৃষ্টিপাত আরও ২-৩ দিন অব্যাহত থাকবে। পাহাড় ধসের সম্ভাবনা রয়েছে ।
 

নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata

কমেন্ট বক্স
প্রতিবেদকের তথ্য